বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ী

 শীতে মধু অনেক উপকারী।

টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার একটি প্রাচীন হস্তশিল্প, যা জামদানি কৌশলের স্বরলিকৃত রূপ। এটি তোলা ও রেশমের সুতা দিয়ে হাতে বোনা হয়, যা দৈনন্দিন পরিধানের জন্য উপযোগী এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক। বৈশিষ্ট্য হলো সূক্ষ্ম বোনা, জ্যামিতিক মোটিফ, নরম টেক্সচার, দৈর্ঘ্য ১২ হাত( প্রায় ৫.৪ মিটার)।বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলায়১১ টি উপজেলায় প্রায় ২০,০০০ কারিগর এই শিল্প চালিয়ে যান।

এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা হাজার বছরের ঐতিহ্য বহন করে। এটি মূলত একটি সরলীকৃত জামদানি শাড়ি, যা শরীরের অংশে ন্যূনতম নকশা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এই শাড়ির কিছু ঐতিহ্যবাহী মোটিফের মধ্যে রয়েছে- ভোমরা, রাজপ্রাসাদ এবং কলকা। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিচের তথ্যগুলো দেখুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলে তাঁতের শাড়ির ইতিহাস
  •  উৎপত্তি এবং উন্নয়ন
  • বোনাপ প্রক্রিয়া
  • উপাদান সমূহ
  • ডিজাইন এবং মোটিফ
  • সাংস্কৃতিক তাৎপর্য
  • অর্থনৈতিক প্রভাব
  • চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ
  • শেষ কথা

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির ইতিহাস

প্রাচীন উৎসঃ টাঙ্গাইলের বোন আকারে শিল্পের ইতিহাস হাজার বছর পুরনো, ইবনে বতুতা ও হিউয়েন সাং- এর লেখায় টাঙ্গাইলের টেক্সটাইলের উল্লেখ।তারা ১৮শ শতাব্দীতে ধামরাই ও চৌহাট্টা থেকে বসাক সাম্প্রদায়ের কারিগররা টাঙ্গাইলে অভিবাসিত হন, যেখানে ধলেশ্বরী নদীর তীরে বসতি স্থাপন করেন। ১৯শ শতাব্দীতে শান্তিপুর (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে প্রভাবিত হয়ে জামদানি কৌশল মিশ্রিত হয়, ব্রিটিশ আমলে মুসলিমের পতনের পর টাঙ্গাইল শাড়ি উত্তরসুরি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

১৯৪৭ সালে অনেক হিন্দু কারিগর ভারতে চলে যান, কিন্তু মুসলিম কারিগররা শিল্প ধারাবাহিক রাখেন। এবং ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর ও শিল্প টিকে থাকে,এবং ২০১০ সালে ভৌগলিক সূচক ট্যাগ পায়। তবে পূর্ব এটি মানিকগঞ্জের বংসাই গ্রামগুলোতে প্রচলিত ছিল।পরে মানিকগঞ্জের তাঁতিরা টাঙ্গাইলের স্থানান্তরিত হয়ে এই শিল্পের উন্নতি ঘটান। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি পরিবার ভিত্তিক শিল্প হিসেবে চালু হয়, একাধিক প্রজন্মের তাঁতিরা এই শিল্পকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন।

 উৎপত্তি এবং উন্নয়ন

উৎপত্তিঃ বসাক( হিন্দু) ও হোতেজোলা( মুসলিম )সম্প্রদায়ের কারিগররা প্রধান,যুগি সম্প্রদায় পশমীয়  কাপড়ে বিশেষজ্ঞ। সিন্ধু অববাহিকা থেকে মুর্শিদাবাদ, তারপর রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, ধামরাই হয়ে টাঙ্গাইলে পৌঁছান , আবহাওয়া অনুকূলতার জন্য। তারপর ১৯শ শতাব্দীতে শান্তিপুর ডিজাইন মিশ্রিত , ১৯৪০- এ শান্তিপুরে ১০,০০০ বোনা পরিবার ছিল উন্নয়নের জন্য।

 এটি দেশভাগের পর বসাক কারিগররা পশ্চিমবঙ্গে নতুন' টাঙ্গাইল' শাড়ি তৈরি করেন, যা ফ্লাই শাটল লুমে বোনা ছিল। আর এর বর্তমান অবস্থা টাংগাইল সদর, কালিহাতী, নগর পুরে প্রধান কেন্দ্র,Gl ট্যাগ বাংলাদেশী সততা রক্ষা করে। তবে জামদানি শাড়ির উৎপত্তি বাংলার ঢাকা অঞ্চলে, যা বর্তমান বাংলাদেশের অংশ, এবং এর ইতিহাস প্রায় দুইহাজার বছরের পুরনো। এর উল্লেখ পাওয়া যায় প্রাচীন অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে, যা খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দের দিকে কৌঠিল্য দ্বারা রচিত।

নবম শতাব্দীতে আরব ভূগোলবিদ সুলাইমান তার গ্রন্থ স্রিল সিলাত-উত্ত তাওয়ারিখ-এ বাংলার মুসলিমের উৎপাদনের কথা উল্লেখ করেছেন।মুঘল আমলে,বিশেষ করে১৭শ শতাব্দীতে, এটি স্বর্ণযুগের সাক্ষী হয়েছে, যখন এটি রাজ পরিবারের প্রিয় ছিল এবং ইউরোপ ,ইরান ও আর্মেনিয়ায় রপ্তানি হত। ১৭৮৭ সালে এর রপ্তানির মূল্য ছিল ৩০ লক্ষ টাকা, কিন্তু ১৯শ শতাব্দীতে ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শাসনের ফলে সস্তা ইউরোপীয় সুতোর আমদানি এবং মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের কারণে এর উৎপাদন কমে যায়। 

১৮১৭ সালের মধ্যে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে, পূর্ব ভারত কোম্পানির হস্তক্ষেপে শিল্পীদের শোষণ রোধ করা হলেও স্বাধীনতার পর এটি পুনর্জীবিত হয়েছে। বর্তমানে এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ এবং আন্ধ্রপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে ,যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া যোগ হয়েছে।ইউনেস্কো ২০১৩ সালে এটিকে অস্পর্শযোগ্য সংস্কৃতি ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা এর উন্নয়নের একটি মাইলফলক।

বোনার প্রক্রিয়া

জামদানি বোনা একটি অত্যন্ত শ্রমসাধ্য এবং দক্ষতার চাহিদার সম্পন্ন প্রক্রিয়া, যা ঐতিহ্যগত কাঠের তাঁতে হাতে এবং পায়ে পরিচালিত হয়। এতে 'ডিসকন্টিনিউয়াস সাপ্লিমেন্টারি ওয়েফট' কৌশল ব্যবহার করা হয়, যেখানে ফুলের মত জটিল ডিজাইন গুলো সরাসরি তাঁতেবোনা হয়, যাতে কোন যান্ত্রিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। একটি জটিল ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করতে দুইজন বোনাকারকে ১৩ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ফলে শাড়িটি হালকা শ্বাস-প্রশ্বাসযোগ্য এবং নরম আবহাওয়ার জন্য আদর্শ হয়।
  • তাঁতের ধরনঃগোর্তে তান্ত (প্রাচীন, বিলুপ্তপ্রায়),চিত্তরঞ্জন (সূক্ষ্ণ),পিতলুম(খট-খটি),সেমি-অটোমেটিক।
    • প্রক্রিয়াঃ সুতা প্রস্তুতি- ওয়ার্পিং- ডিজাইন সেটআপ (জ্যাকার্ড বা হাতে)-বোনা(অতিরিক্ত ওয়েফট দিয়ে মোটিফ তৈরী)-ফিনিশিং(নটাই পদ্ধতি সঙ্কোচন রোধ করে)।
    • কৌশলঃ জামদানির স্বরলিকৃত রূপ, অতিরিক্ত ওয়ে ফট, গ্রাউন্ড ওয়েফট অনুপাত ১:২ প্রান্ত ধাপাকার ডিজাইন।
    • বিশেষত্বঃ হাতে ঘোরানো তুলা সুতা, ধোয়ার পর নরম ও উজ্জ্বল হয়।

    উপাদান সমূহ

    উপাদান হিসাবে মূলত সূক্ষ্ণ তু্লার সুতো ব্যবহৃত হয়, যা ধূসর -সাদা মিশ্রণে বোনা হয়; কখনো সিল্ক যোগ করে বিলাসিতা বাড়ানো হয় এবং সোনা -রুপার সুতা বা খাদি তুলোর ব্যবহার  ও দেখা যায়। ঐতিহ্যগতভাবে প্রাকৃতিক রং( ফুল- পাতা থেকে) ব্যবহৃত হতো কিন্তু আজকাল রাসায়নিক রং বেশি প্রচলিত। এটি পরিবেশবান্ধব এবং হাতে তৈরি যা এর মূল্য বাড়ায়।
    • প্রধান উপাদানঃতুলা(১০০এস সুক্ষ্ণ সুতা),রেশম(১৪/১৬-২০/২২ডেনিয়ার),তাসার সুতা;সিন্থেটিক ফিলামেন্ট সীমিত ব্যবহার।
    • স্থানীয় কোর্সঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তুলা বিখ্যাত; সুতা হাতে ঘুরানো।
    • বৈচিত্র্যঃ তুলো- তুলো, তুলো -রেশম, পুরো -রেশম; পরিবেশ বান্ধব, দীর্ঘস্থায়ী।
    • প্রভাবঃ মধ্যম আবহাওয়া সুতার গুণমান বজায় রাখে।
    • আধুনিক পরিবর্তনঃ জৈব তুলা ব্যবহার বাড়ছে স্থায়িত্বের জন্য।

    ডিজাইন এবং মোটিফ

    জামদানি নামটি ফার্সি শব্দ 'জাম' (ফুল) এবং 'দানি' (কলসি) থেকে এসেছে, যা এর ফুলময় ডিজাইন কে নির্দেশ করে। এর মোটিফ গুলো অত্যন্ত জটিল এবং সংস্কৃতিক অর্থবহ, যেমন' হাজার বুটি জামদানি' যাতে হাজার ফুলের মতো প্যাটার্ন থাকে। জনপ্রিয় মোটিফের মধ্যে রয়েছে পানহাজার (হাজার পান্না বা উজ্জ্বল পাথরের মত),কলকা যা মুঘল যুগের পান্ডলিপি থেকে উদ্ভূত এবং আমের মোটিফ যা উর্বরতা এবং বিবাহিত জীবনের প্রতীক।

    অন্যান্য মোটিফে জুই, গোলাপ, পদ্ম এমনকি কলা ফল ও অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন ধরনের জামদানিতে ভিন্নতা দেখা যায় ,ঢাকায় জামদানিতে রঙ্গিন মোটিভ এবং মোটা বর্ডার, তাগাইলে এক-দুই রঙের বর্ডার যা মিনা গাড়ির মতো মিনা কারীর মতো এবং শান্তিপুর চেক-স্টাইপ প্যাটার্ন। আধুনিক উদ্ভাবনে তাই এন্ড-ডাই প্যাটার্ন পল্লুতে যোগ হয়েছে ।এগুলো শাড়ির পাশাপাশি স্কার্ফ বা রুমালেও ব্যবহৃত হয় ।
    • মোটিফঃ ফুল, পাতা, পাখি, জ্যামিতিক আকৃতি ;জ্যাকার্ড বা হাতে অতিরিক্ত ওয়েফট দিয়ে।
    • প্রধান ডিজাইনঃ বুটি( জ্যামিতিক ফুল -পাতা ),থান( সাদা সীমানা), নকশা- পার (জটিল প্যাটার্ন),আঁচলে ক্রস-বর্ডার। এছাড়াও পাড় ও আঁচলের নকশা অত্যন্ত সুন্দর এবং সুক্ষ্ণ বুনুনের জন্য পরিচিত।
    • ফ্যাব্রিকঃ সাধারণত সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি ।তবে মিশ্র সিল্ক এবং সুতি, শুধুমাত্র সিল্ক শাড়ি পাওয়া যায়।
    • রঙ ঃ ঐতিহ্যবাহী সাধারণত উজ্জ্বল রঙ যেমন- সাদা, কালো, লাল,আধুনিকে নীল, গোলাপী এবং সবুজ। তাছাড়া, কালার ব্লকিং এবং সমৃদ্ধ রঙ ও ব্যবহার করা হয়।
    • বৈচিত্র্যঃ সাধারন( দৈনন্দিন), জামদানি -টাইপ( উৎসব মুখি), শরীরে বুটি-সজ্জিত ।
    • বিশেষত্বঃ প্রতিটি মোটিভ গ্রাফিক্যাল, ধাপাকার প্রান্ত ;১০ থেকে ১২ হাতের সুক্ষ্ণতা।

    সাংস্কৃতিক  তাৎপর্য

    • সামাজিক ভূমিকাঃ পরিবার ভিত্তিক শিল্প ,নারী-পুরুষ সকলে অংশগ্রহন, কৌশল রক্ষা ।
    • প্রতীকী মূল্যঃ বাংলাদেশী নারীর পরিচয়ের প্রতীক; উৎসব , বিবাহ দৈনন্দিনে পরিধান ।
    • ঐতিহ্য সংরক্ষণঃ মুক্তিযুদ্ধের সময়ও টিকে থাকে; Gl ট্যাগ সাংস্কৃতিক ঐক্যবদ্ধ করে ।
    • সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যঃ মুঘল আমলের মুসলিনের উত্তরাধিকারী বাংলার সংস্কৃতির সেতু ।
    • বিশ্বব্যাপী প্রভাবঃ ঢাকা থেকে লন্ডন পর্যন্ত চাহিদা; ফ্যাশন শোতে প্রদর্শিত ।
    এই বিষয়ে নিম্নে আরো আলোচনা করা হলো-জামদানি বাঙালি পরিচয়ের প্রতীক, যা মর্যাদা, আত্মসম্মান এবং সামাজিক ঔক্যের অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে বাঙালি নারীদের প্রধান পোশাক, যা বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা বিশেষ উপলক্ষে পরিধান করা হয়। বোনাকারার এতে গভীর গর্ভ অনুভব করেন এবং পারিবারিক ভিত্তিক কর্মশালায় জ্ঞান প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরিত হয়, যা সম্প্রদায়ের ঐক্যকে শক্তিশালী করে।
    মাস্টার বোনাকাররা ঐতিহ্যগত মটিফের রক্ষক হিসেবে সম্মানিত। এটি বাংলার টেক্সটাইল ঐতিহ্য এবং মুসলিম কারু কাজের মিলনের ফল,যা ১৪শ শতাব্দী থেকে চলে আসছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মাধ্যমে এর সংস্কৃতির মূল্য আরো ও বেড়েছে।

    অর্থনৈতিক প্রভাব

    • কর্মসংস্থানঃ ২ লক্ষের বেশি পরিবারের জীবিকা; মহিলাদের ক্ষমতায়ন ।
    • শিল্পের আকারঃ বাংলাদেশের কুটির শিল্পের ২৫% অংশ ;বার্ষিক উৎপাদন ১ কোটি শাড়ি,আয় ৫০০ কোটি টাকা ।
    • রপ্তানিঃ আমেরিকায় চাহিদা; ইউরোপ, অনলাইন প্লাটফর্ম বাড়িয়েছে বিক্রি ।
    • সরকারি সহায়তাঃভর্তুকি, প্রশিক্ষণ;Gl ট্যাগ রপ্তানি বাড়িয়েছে ৩০% হারে ।
    • স্থানীয় অর্থনীতিঃ টাঙ্গাইলের GDP-এর ৪০% অবদান ।
    অর্থনৈতিক প্রভাব এর বিষয়ে নিম্নে আরো কিছু আলোচনা করা হলো-জামদানি শিল্প গ্রামীণ অঞ্চলে অসংখ্য পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে, বিশেষ করে ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায়। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকায় এটি রপ্তানি আয় বাড়ায় এবং বাংলাদেশ ও ভারতের টেক্সটাইল শিল্পকে সমৃদ্ধ করে। এতে স্পিনার, রঙ্গ কার 

    এবং লুম- ড্রেসারের মতো বিভিন্ন ভূমিকা জড়িত, যা একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করে। পরিবার ভিত্তিক কর্মশালাগুলোতে উচ্চ মানের পণ্য উৎপাদন করে শিল্পীদের আয় নিশ্চিত হয়, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা (যেমন SDG৮: সম্মানজনক কর্মসংস্থান) এর সাথে যুক্ত।

    চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ

    • চ্যালেঞ্জঃ পাওয়ার লুমের প্রতিযোগিতা,কাঁচামালের দামবৃদ্ধি, তরুণ প্রজন্মের অনীহা,জাল টাঙ্গাইল শাড়ির সমস্যা ।
    • সমাধানঃ সরকারি কর্মসূচি (দক্ষতা উন্নয়ন ),জৈব উপাদান, ডিজিটাল মার্কেটিং ।
    • প্রস্তাবঃ কারিগরদের প্রশিক্ষণ,GL প্রচার বাড়ানো ।.
    • ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাঃ আধুনিক ডিজাইন মিশ্রণ(ফিউশন ফ্যাশন),স্থায়িত্বমূলক উৎপাদন; ২০৩০ নাগাদ রপ্তানি দ্বিগুণ .
    • উপদেশঃ ঐতিহ্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়ানো দরকার । কারণ এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক যা আপনাকে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত রাখেন ।
    এছাড়াও তাঁতের শাড়ি শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ।একাধিক ডিজাইনার এবং হস্তশিল্প এখন এই ঐতিহ্যবাহী বুননকে আধুনিক উপস্থাপন করেছেন। ভবিষ্যতে এটি আরো বৈচিত্র্যময় এবং ফ্যাশনেবল হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে । জামদানি বোনাশ্রমসাধ্য এবং  সময় সাপেক্ষ, যা যান্ত্রিক উৎপাদনের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার কারণ।

    দক্ষ বোনাকারের সংখ্যা দিন দিন কমছে, কারণ যুবকরা এই পেশা ছেড়ে আধুনিক চাকরির দিকে ঝুঁকছেন । অতীতে শোষণ( যেমন সস্তায় বিক্রি) এবং সস্তা আমদানি এর পতন ঘটিয়েছে। এছাড়াও রাসায়নিক রঙের ব্যবহার পরিবেশের ক্ষতি করে এবং ঐতিহ্য রক্ষায় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। জামদানির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, কারণ হস্তশিল্পের চাহিদা বাড়ছে এবং টেকসই ফ্যাশনের প্রবণতা এটিকে সাহায্য করছে।

    শিক্ষা এবংপ্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা সংরক্ষণ,জিআই ট্যাগ (ভৌগোলিক সূচক) এবং নারী ক্ষমতায়নের উদ্যোগ (যেমনSDG ৫)এর মাধ্যমে এটি বেড়ে উঠবে। আধুনিক ডিজাইন যোগ করে এটি যুবকদের আকর্ষণ করতে পারে, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রসারের সম্ভাবনা রয়েছে,যা অর্থনৈতিক সংস্কৃতিকভাবে এর ঐতিহ্যকে অটুট রাখবে।

    শেষ কথাঃ

    টাঙ্গাইলে তাঁতের শাড়ি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ধন,যা প্রজান্মান্তরে ঐতিহ্য বহন করে। এটি শুধু কাপড় নয়,গল্পের সংগ্রহ -কারিগরদের দক্ষতা ও সংগ্রামের। এটি তুলা ও রেশমের সুতা দিয়ে হাতে বোন হয়, যা দৈনন্দিন পরিধানের জন্য উপযোগী এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক। এর বৈশিষ্ট্য হলো- সূক্ষ্ণ বোনা, জ্যামিতিক মোটিফ, নরম টেক্সচার, দৈর্ঘ্য ১২ হাত ।

    বর্তমানে এটি টাঙ্গাইল জেলায় ১১ টি উপজেলায় প্রায় ২০,০০০ কারিগর এই শিল্প চালিয়ে যান। এই শাড়ির কিছু ঐতিহ্যবাহী মোটিভের মধ্যে রয়েছে ভোমরা, রাজপ্রাসাদ এবং কলকা। তবে হাফ সিল্ক, মিক্স কটন, পিওর সিল্ক ও সুতি শাড়ি ও তৈরি করা হয়।এই শাড়ি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার একটি প্রাচীন হস্ত শিল্প,যা জামদানি কৌশলের স্বরলিকৃত রূপ।






    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url